মন্তাজ উদ্দিন বেপারী, পিতা ছলুমুদ্দিন বেপারী এবং মাতা করফুলনেছা, জন্মগ্রহণ করেন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ধামগর ইউনিয়নের মুগসাইর দাররা গ্রামে। একজন সাহসী ও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
তার বাবা ছলুমুদ্দিন ছিলেন একজন ধার্মিক ও সমাজসেবী ব্যক্তি। আর মা করফুলনেছা ছিলেন একজন পর্দানশীন, ধার্মিক নারী। পারিবারিক পরিবেশ ছিল সাদামাটা, কিন্তু আদর্শিক দৃঢ়তায় ভরপুর।
১৯৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি পাহাড়পুর গ্রামের কমান্ডার তাজুল ইসলাম খোকনের নেতৃত্বে ভারতের কলামচূড়া এলাকায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সেখান থেকে ফিরে এসে বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ করেন। তবে কিছু দুশ্চরিত্র ব্যক্তির ভুল পরামর্শে তিনি পরে কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। আজও তিনি নিশ্চিত নন, তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে কি না।
১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় নিজের ভিটেমাটি হারিয়ে তিনি চলে আসেন দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কুড়াখাল পূর্ব পাড়া গ্রামে। শ্বশুরবাড়ির সহায়তায় সেখানেই নতুন করে জীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ছয় কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার একমাত্র ছেলে একজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।
মন্তাজ উদ্দিন বেপারী বলেন—
“আমি আজও গরীব মানুষ, কিন্তু চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন আমার পরিবার অন্তত শান্তিতে থাকতে পারে।”
তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম এবং সমাজের বিবেকবান মানুষের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন—
“একজন সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা যেন অবহেলার শিকার না হয়। আমার বিষয়টি খতিয়ে দেখুন। আমাকে এবং আমার পরিবারকে বাঁচার সুযোগ দিন।”
বর্তমানে পরিবারের একজনের আয়ে চলে সংসার, যা দিন দিন কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। তিনি আশা করেন, সরকারি সহায়তা পেলে তার ছয় মেয়ে ও একমাত্র ছেলের জীবন বদলে যাবে, তারা সমাজে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারবে।
লেখক : মো: সেলিম রানা (সাংবাদিক)
উপ-সহকারী পরিচালক কুমিল্লা জেলা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনী সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা
Leave a Reply